আজ ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংগৃহীত ছবি

প্রেসারের রোগীদের রোজার খাদ্যাভ্যাস


অনলাইন ডেস্কঃ যেসব রোগী উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন এবং রোজা রাখছেন; সুস্থ্য থাকার জন্য তাদের সঠিক খাদ্য ব্যবস্থাপনা জরুরি। সাধারণত রক্তচাপ যেন বেড়ে না যায় অথবা ওঠানামা না করে, সেজন্য অবশ্যই নিয়মানুযায়ী খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন।

সাধারণত এ ধরনের রোগীদের ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন হয়। তাই সঠিক খাদ্যের পাশাপাশি রোজার সময় ওষুধ সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক সময়ে খাওয়া জরুরি। রোজা রেখে সঠিক মাত্রায় সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা হলে সুস্থভাবে রোজা সম্পন্ন করা যায়।

উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের রোজায় অনেক বুঝে খেতে হয়। গতানুগতিক ভাজাপোড়াজাতীয় খাবার রক্তচাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ভাজাপোড়াজাতীয় খাবারের পরিবর্তে সহজ পাচ্য, সেদ্ধ নরম খাবার অনেক উপকারে আসে।

বেশ কিছু খাদ্য উপাদান, যেমন—টেস্টিং সল্ট, বেকিং সোডা, বেকিং পাউডার, সয়া সস, ওয়েস্টার সস ইত্যাদি উপাদান দিয়ে তৈরি খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বাড়ির তৈরি ইফতারে এই উপাদানগুলো বাদ দিয়ে খাদ্য প্রস্তুত করা যায়। তবে কেনা খাবারে এই উপাদানগুলো দেওয়া থাকে। তাই বাইরের কেনা যেকোনো ইফতারের খাবার উচ্চচাপের রোগীদের এড়িয়ে চলতে হবে।

এ ছাড়া লবণের বিষয়ে অনেক সতর্ক থাকতে হবে। অতিরিক্ত লবণের পাশাপাশি বিট লবণও এড়িয়ে চলতে হবে। খাবারকে একটু স্বাদযুক্ত করার জন্য লবণ কম ব্যবহার করে যেকোনো হার্বস, গোলমরিচ, সিরকা ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।

অতিরিক্ত ফ্যাটজাতীয় খাবার, যেমন—ফ্রাইড ফুড, ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে হবে। ভিন্নধর্মী খাবার প্রস্তুতিতে বেকড, গ্রিল, স্টিম, স্যালো ফ্রাই ইত্যাদি রন্ধন প্রণালি ব্যবহার করা যেতে পারে।

সবজি ও ফল থেকে অনেক পুষ্টি পাওয়া যায়। পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই ইফতারে ফল ও সবজি খেতেই হবে। খেজুর, কলা, আম, বেল ইত্যাদি উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত ফল। তাই সেহরি, ইফতার ও রাতের খাবারে উপরিউক্ত ফল খাওয়া যেতে পারে।

সবজি স্যুপ, রান্না সবজি, সবজি নুডলস, সবজি স্যান্ডউইচ থেকেও ভালো মাত্রায় পটাশিয়াম আসে, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

লো ফ্যাট দুধ বা নন-ফ্যাট দুধ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের জন্য উপকারী। সাধারণত দুধে পানি মিশিয়ে পাতলা না করে এই দুধ খাওয়া ভালো। দুধ হজমে অসুবিধা থাকলে টক দই, ছানা খাওয়া যেতে পারে। তবে দুধের পনির এড়িয়ে চলতে হবে।

আরও পড়ুন গরমকালের রোজায় যেমন হওয়া উচিত খাদ্যাভ্যাস

সঠিক খাদ্যব্যবস্থার পাশাপাশি আরো কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। রোজা রেখে অনেকে দুর্বল বা অসুস্থ বোধ করলে রক্তচাপ মাপতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যারা দীর্ঘমেয়াদি রোগী এবং অনেক ডোজের ওষুধ সেবন করেছেন, তারা প্রয়োজনে রোজার মাঝামাঝি সময় বা ১৫তম রোজায় একবার সিরাম ইলেকট্রোলাইটস পরীক্ষা করতে পারেন। কেননা, যারা উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খান, তাদের রক্তের সোডিয়াম হঠাৎ কমে যেতে পারে। তাই শরীর অতিরিক্ত খারাপ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষাটি করিয়ে নেবেন।

অতিরিক্ত রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত চা, কফি, কোল্ডড্রিংস এড়িয়ে যেতে হবে। খাবারের সঙ্গে আলাদা লবণ পরিহার করতে হবে। সম্ভব হলে দিনে হালকা বিশ্রাম নিতে হবে। অতিরিক্ত চিন্তা এড়িয়ে চলতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম হতে হবে।

লেখক: তামান্না চৌধুরী, প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।
তথ্যসূত্র: এনটিভিঅনলাইন


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর